স্বদেশ ডেস্ক:
আমাদের খেতে দাও, দয়া করে, বাঁচতে দাও- পশ্চিমাদের কাছে এমন আকুতি জানিয়েছে আফগানিস্তানের বিক্ষোভকারীরা। শতশত প্রতিবাদী আফগান গতকাল ঝাঁপ-ফেলা মার্কিন দূতাবাসের সামনে জড়ো হয়ে আবেদন জানিয়েছে, যেন আফগানিস্তানের আটকে রাখা অর্থ-সম্পদ পশ্চিমা দেশ ও সংস্থাগুলো ছেড়ে দেয়। দেশটিতে তালেবানের দ্বিতীয় শাসন শুরু হলে এসব অর্থ-সহায়তা স্থগিত ও গচ্ছিত সম্পদ জব্দ করে ফেলে ইউরোপ-আমেরিকা আর বিশ^ সংস্থাগুলো।
১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মাধ্যমে পুরো আফগানিস্তানে দ্বিতীয় মেয়াদে শাসন-কর্তৃত্ব অর্জন করে সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান। যে যুক্তরাষ্ট্র ২০০১ সালে তাদের উচ্ছেদ করে ‘অগ্রসরমান আফগানিস্তান’ গড়তে চেয়েছিল, সেই মার্কিন ও এর মিত্রবাহিনীকে হটিয়ে পুনরায় ক্ষমতায় এসেছে কট্টরবাদী ইসলামিক গোষ্ঠীটি। তবে এবার তারা সবার অংশগ্রহণমূলক- যদিও তা অগণতান্ত্রিক- সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। পাশাপাশি, নারীর মর্যাদা সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু কিছুদিন না যেতেই খোলস খুলে তাদের পুরনো চেহারায় দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। এমন আশঙ্কা থেকেই দেশটির জন্য পূর্বে বরাদ্দ সব সহায়তা স্থগিত করা হয়, জব্দ করা হয় অর্থ-সম্পদ।
কিন্তু জাতিসংঘ এবং বিশ^ খাদ্য কর্মসূচি বারবারই বলে আসছে, আফগানিস্তান গভীর মানবিক সংকটের মধ্যে পড়ে গেছে। দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ দরকার।
আল জাজিরা জানিয়েছে, গতকাল রাজধানী কাবুলে বিক্ষোভের সময় আফগানদের হাতে যেসব ব্যানার ছিল, এগুলোতে লেখা ছিল, ‘আমাদের খেতে দাও’ এবং ‘আমাদের আটকে রাখা টাকা ফেরত দাও’। এ সময় শাসকবাহিনী তালেবানের নিরাপত্তাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের সুরক্ষায় নিয়োজিত ছিল।
আফগানদের জব্দ সম্পদ ছেড়ে দিতে এর আগে রবিবার মুসলিম রাষ্ট্রগুলো জাতিসংঘের সঙ্গে একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। এদিন পাকিস্তানে ৫৭ সদস্য রাষ্ট্রের ইসলামিক সহায়তা সংস্থার (ওআইসি) বৈঠক হয়। আগস্টে তালেবানের রক্ষপাতহীন ও অপ্রত্যাশিত অভ্যুদ্বয়ের পর আফগানিস্তান নিয়ে এ প্রথম বড় পরিসরে কোনো বৈঠক হলো। এদিকে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ইন্টারনেটের সবচেয়ে পরিচিত ও বিশ্বের সর্ববৃহৎ সার্চ ইঞ্জিন গুগলে চলতি বছর সবচেয়ে বেশি সন্ধান করা শব্দের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে আফগানিস্তান।